শত চেষ্টার পরও যে খারাপ অভ্যাসগুলো আমাদের দ্বারা ছাড়া সম্ভব হয় না, সেই বদঅভ্যাসগুলো আমাদের নিজেদের এবং অন্যের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিছু বদঅভ্যাস ছেড়ে দেয়ার জন্য আমাদের অনেক কথা হজম করে নিতে হয় কিন্তু তারপরও বদঅভ্যাস ছাড়া অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।
তবে সব বদঅভ্যাসই কিন্তু খারাপ নয়। এমন কিছু বদঅভ্যাস রয়েছে যা আসলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। শুনতে অবাক মনে হলেও আসলেই কিছু বদঅভ্যাস আমাদের আয়ত্তে রয়েছে যা আমাদের দেহের সুস্থতায় কাজ করে থাকে।
অগোছালো থাকা বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতা বাড়ায় : ঘরদোর অগোছালো করে রাখার কারণে বাবা মায়ের অনেক বকাঝকা খেয়ে থাকেন সন্তানেরা। এবং এই অগোছালো থাকার পেছনে একগাদা মিথ্যে কারণ দাঁড়া করান অনেকে। কিন্তু এই বদঅভ্যাসটি অনেক ভালো আপনার মস্তিষ্কের জন্য। নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় দেখা যায় অগোছালো জিনিসপত্রের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে নেয়ার এই কাজটি মস্তিষ্কের দক্ষতা বাড়াতে বেশ কার্যকর। এছাড়াও প্রায় ১০০০ জন মানুষের অপর গবেষণা চালিয়ে দেখা যায় যারা অগোছালো ঘরে বসে থেকে ছবি আঁকছেন বা পাজল সমাধান করছেন তারা অনেক বেশি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিচ্ছেন একজন গোছানো ঘরে বসে থাকা মানুষের তুলনায়।
আড্ডা দেয়া মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতা কমায় : বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা দেয়ার কারণে বকুনি এবং পিটুনি খাননি এমন মানুষ অনেক কমই রয়েছেন। কিন্তু আপনি জানেন কি আপনার এই আড্ডা দেয়া আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কতোটা উপকারী? গবেষণায় দেখা যায় যারা ২০-৩০ মিনিট টানা আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন তারা মানসিক দুশ্চিন্তা, নানা সমস্যা এবং নিজের বিষণ্ণতা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন। গবেষণায় প্রায় ৯৬% মানুষের মানসিক অবস্থার উন্নতি লক্ষ্য করা যায় স্পষ্টভাবে। তাই আড্ডা দেয়া খারাপ কিছু নয়। কিন্তু আপনি যদি অন্য মানুষের নামে খারাপ কথা বলাকে আড্ডা ধরে নেন তাহলে কিন্তু এটি ভালো নয়।
ইন্টারনেট সার্ফিং জ্ঞান বাড়ায় : ইন্টারনেটে আপনি মজার ভিডিও কিংবা নানা বিষয়ে যতোই অযথা সার্চ দিয়ে সময় নষ্ট করুন না কেন এটি কিন্তু আপনার জন্য যতোটা খারাপ হওয়ার কথা ঠিক ততোটা খারাপ নয়। আপনি ইন্টারনেটে যতো জিনিস দেখবেন না কেন তা আপনার জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করবে এবং মস্তিষ্ককে সচল রাখবে। এছাড়াও ইন্টারনেটে মজার ছবি বা ভিডিও দেখলে মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা, উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা, ব্যথা উপশমে বেশ ভালো কাজ করে। তবে আপনি যদি ইন্টারনেটে শুধুই খারাপ কিছু দেখতে থাকেন তাহলে তা আপনার মানসিক দিকটা অসুস্থ করে ফেলবে।
দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো : সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসটিকে সুঅভ্যাস বলেই জানি আমরা। সকালে দেরি করে ঘুম থেকে উঠাটাকে বদঅভ্যাসই ধরা হয়। তবে এই বদঅভ্যাসটি কিন্তু আপনার হৃদপিণ্ডের সুরক্ষায় বেশ ভালো কাজ করে থাকে। ভাবছেন কিভাবে? গবেষণায় দেখা যায় যারা ভোর ৫ টার আগে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করেন তারা অন্যান্যদের তুলনায় কার্ডিওভ্যস্কুলার সমস্যায় বেশি ভোগেন। বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় দেখতে পান যারা খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন তাদের উচ্চ রক্ত চাপ, শিরাউপশিরা শক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যায় পড়ে থাকেন।
No comments:
Post a Comment